আসিফ আহমাদ
পবিত্র কুরআনের একটি সূরার নাম হচ্ছে “নামল”। আরবিতে নামল অর্থ- পিঁপড়া। সূরার 18 ও 19 নং আয়াতে পিঁপড়ের উপত্যকা দিয়ে হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের সসৈন্যে গমন, তখন পিঁপড়েদের উদ্দেশ্যে এক পিঁপড়ের ভাষণ দেওয়ার ঘটনা উল্লেখ হয়েছে। আয়াতে বলা হয়েছে, “একদিন যখন তারা পিঁপড়ের উপত্যকায় পৌঁছলো, তখন এক পিঁপড়ে বলল, ওহে পিঁপড়েরা! নিজ ঘরে ঢুকে পড়, পাছে সুলাইমান ও তার সৈন্যরা তাদের অজ্ঞাতসারে তোমাদেরকে পিষে ফেলে।“
সুলাইমান আলাইহিস সালাম এই কথা শুনে ফেললেন। তিনি পিঁপড়েকে তার কাছে ধরে আনার আদেশ করলেন। পিঁপড়েকে ধরে আনার পর তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ওহে পিঁপড়ে! আমি কি জালেম? তুমি পিঁপড়েদেরকে কেন ভয় দেখালে যে আমরা তাদের পিষে ফেলবো?!
পিঁপড়ে উত্তরে বলল, আপনি কি শুনেন নি আমি বলেছি যে, “তারা অজ্ঞাতসারে এই কাজ করবে!?”
পিঁপড়ে আরও বলল, হে নবী! তাছাড়া এই কথার দ্বারা আমার উদ্দেশ্য আরেকটি। তা হল, আপনি তাদের সামনে দিয়ে যাওয়ার দ্বারা তাদের জান নয় বরং তাদের অন্তর পিষে যাবে। কেননা, যখন তারা আপনার বিশাল ক্ষমতা ও রাজত্ব দেখবে তখন তাদের মন ছোট হয়ে যেতে পারে। এতে তারা হয়তো নেয়ামতের না শুকরি করবে। আল্লাহর তাসবীহ পাঠে গাফিলতি করবে। তাই আমি তাদের গর্তে ঢুকে যেতে বলেছি।
হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম পিঁপড়ের কথা শুনে খুবই আশ্চর্যান্বিত হলেন। তিনি বুঝলেন এই পিঁপড়েটা অনেক জ্ঞানী। তাই তিনি পিঁপড়েকে বললেন, আমাকে কিছু নসিহত করো!
তখন পিঁপড়ে বলল, হে সুলাইমান (আলাইহিস সালাম)! আপনি কি জানেন আপনার পিতার নাম দাউদ কেন? সুলাইমান আলাইহিস সালাম বললেন, নাতো!
পিঁপড়ে বলল, আপনার পিতা তার কলবের দাওয়ার (চিকিৎসা) ব্যবস্থা করেছেন, এজন্য তার নাম দাউদ (আঃ)।
পিঁপড়ে আবার বলল, হে সুলাইমান, আপনি কি জানেন আপনার নাম সুলাইমান কেন?
সুলাইমান আলাইহিস সালাম জবাবে বললেন, নাতো!
পিঁপড়ে বলল, কেননা আপনার কলব সালিম (পবিত্র)।
এরপর পিঁপড়ে বলল, হে সুলাইমান, আপনি কি জানেন আল্লাহ তাআলা আপনার জন্য বাতাসকে কেন অনুগামী করে দিয়েছেন?
সুলাইমান আলাইহিস সাল্লাম বললেন, না তো!
তখন পিঁপড়ে বলল, আল্লাহ তাআলা বাতাসকে অনুগামী করে দিয়ে সবাইকে বোঝাতে চান যে, পুরো দুনিয়াটাই যেন বাতাস (অস্থায়ী ও ধ্বংসশীল)।
তাই কেউ যদি দুনিয়ার উপর ভরসা করে তাহলে সে যেন অস্থায়ী ধ্বংসশীল বাতাসের উপর ভরসা করল।
(নাফহাতুল আরব,৬৭)
Mashallah