কুরবানী কার উপর ওয়াজিব

কুরবানি কি?আরবি করব বা কুরবান (قرب বা قربان) শব্দটি উর্দূ ও ফার্সীতে (قربانى) কুরবানি নামে রূপান্তরিত। এর অর্থ হলো-নৈকট্য বা সান্নিধ্য।আর পারিভাষিক অর্থ আমাদের সবারই জানা।
কুরবানী অতি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ও ইসলামের নিদর্শন। সামর্থ্যবানরা কুরবানী না করার ব্যাপারে কঠিন ধমকি বর্ণিত হয়েছে।
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, من كان له سعه ولم يضح فلا يقربن مصلانا
‘সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়।‘
অর্থাৎ,একজন মুসলমান যাবতীয় সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও এ সুমহান কাজ থেকে বিরত থাকতে পারেনা। এরপরও হঠকারীতা করে কেউ যদি বিরত থাকে, তাহলে এ ধরনের লোকের সকলের সাথে ঈদ উদযাপন করার কি অধিকার আছে!

কার উপর ওয়াজিব

• সুস্থমস্তিষ্ক প্রাপ্তবয়স্ক ও মুকিম নর-নারী, যিনি 10 জিলহজ ফজর থেকে 12 যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জীবনধারণের মৌলিক প্রয়োজনীয় সামগ্রী ব্যতীত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবেন, তার উপর কুরবানী ওয়াজিব।
• স্বর্ণের ক্ষেত্রে নিসাব হল সাড়ে সাত ভরি আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে 52 ভরি,
আর অন্য বস্তুর ক্ষেত্রে এর মূল্য সাড়ে 52 ভরি রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া।
• মৌলিক প্রয়োজনীয় (জরূরতে আসলিয়া) সম্পদ হচ্ছে, জীবন ধারণ ও ইজ্জত-আব্রু সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো। অর্থাৎ, যে সকল জিনিস না হলে জীবন ও ইজ্জত-আব্রু হুমকির মুখে পড়ে। যেমন:খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, কোন পেশাজীবী মানুষের সংশ্লিষ্ট পেশার সরঞ্জাম।
• ব্যক্তিগত অলংকার বা অন্য অন্যান্য সম্পদ যদি নেসাব পরিমাণ হয়, তাহলে পুরুষের মতো নারীর ও উপরেও কোরবানি ওয়াজিব হয়।
• যৌথ ব্যবসায়ী অথবা একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের প্রত্যেকের আলাদাভাবে সম্পদের হিসাব করতে হবে। অতঃপর যাদের মালিকানায় নেসাব পরিমাণ সম্পদ হবে, তাদের প্রত্যেকের উপর আলাদা কুরবানী ওয়াজিব হবে।
• কোন ব্যক্তি যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক না হয়, তবে কুরবানী করার নিয়তে পশু ক্রয় করে,তাহলে ওই পশুটি কোরবানি করা তার উপর ওয়াজিব।
• স্ত্রী যদি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় তাহলে তার নিজের পক্ষ থেকে স্বতন্ত্র কুরবানী করতে হবে।স্বামীর পক্ষ থেকে করা কুরবানী স্ত্রীর জন্য যথেষ্ট হবে না।
• কেউ যদি কুরবানীর দিনগুলোতে ওয়াজিব কুরবানী আদায় করতে না পারেন, তাহলে তিনি যদি পশু ক্রয় করে থাকেন, তাহলে উক্ত পশুটি জীবিত সদকা করে দিবেন। আর যদি পশু ক্রয় না করে থাকেন, তাহলে একটি কুরবানীর উপযুক্ত পশুর মূল্য সদকা করে দিতে হবে।
(মাসায়েলে কুরবানী)

Leave a Reply