ঈদুল আযহা, লক্ষ্য হোক তাকওয়া

আসিফ আহমাদ

পবিত্র ঈদূল-আযহা সমাগত। ঈদুল ফিতরের পর ঈদুল আযহা মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব। আমাদের এই দুই ঈদ ভিন্ন ভিন্ন স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। তাই প্রতিটির জন্য আমাদের প্রস্তুতিও হয় আলাদা। ঈদুল আযহার প্রধানতম বিষয় হচ্ছে- পশু-কুরবানী। এ প্রসঙ্গে মুফতি শফি উসমানী রহমতুল্লাহি আলাইহি লিখেছেন; “কুরবানী আর্থিক ইবাদতসমূহের মধ্যে বিশেষ স্বাতন্ত্র্য ও গুরুত্বের অধিকারী। কেননা,আল্লাহ তাআলার নামে কুরবানী করা প্রতিমা পূজারীদের বিরুদ্ধে একটি জিহাদ বটে। কারণ মক্কার মুশরিকরা প্রতিমার নামে কুরবানী করতো।( মারিফুল কুরআন, সুরা কাউসার)
আমাদের দেশে কোরবানি কে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে দেখা যায়। যেমন কুরবানীর জন্য বাজেট আলাদা করা, টেক্কা দেওয়ার জন্য বড় পশু কেনা, অথবা সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজ কেনা ইত্যাদি।
যদিও কুরবানীর উদ্দেশ্যের সাথে এগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই।
কুরবানীর উদ্দেশ্য হচ্ছে, “আল্লাহ তায়ালার আদেশ শিরোধার্য মেনে তার সন্তুষ্টির জন্য অর্থ ব্যয় করে পশু জবাই, ইব্রাহিমের সুন্নত পালন,তাকওয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার প্রচেষ্টা, এবং গরিবদের প্রতি সহানুভূতি।
কেননা যার উদ্দেশ্যে আমাদের কুরবানী তাঁরতো গোশত রক্ত কিছুরই প্রয়োজন নেই। বরং কুরবানীর মাধ্যমে আমরাই তাঁর নৈকট্য অর্জন করি,
আমরাই উপকৃত হই।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালার ইরশাদ:
لن ينال الله لحومها ولا دماؤها ولكن يناله التقوى منكم
অর্থাৎ, এই পশুর রক্ত বা গোশত কোনটাই আল্লাহর নিকট পৌঁছে না। তবে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।
তাছাড়া নিষ্ঠাবান কুরবানী দাতার জন্য রয়েছে সওয়াব ও মাগফিরাতের সুসংবাদ।। হাদীস শরীফে কুরবানীর পশুর প্রতিটি পশমের বিনিময়ের সওয়াবের কথা বর্ণিত হয়েছে।
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে এসেছে, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ফাতেমা (রাঃ)কে বলেছেন,
“আমার সাথে তোমার কুরবানির কাছে চলো, আর দেখো। কেননা প্রথম ফোটা রক্ত প্রবাহের সাথে সাথেই তোমার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। হযরত ফাতিমা (রাঃ) বললেন, এটা কি আহলে বাইতের জন্য নাকি সব মুসলিমদের জন্য?
নবীজি উপর দিলেন, না, বরং এটি সব মুসলিমদের জন্যই ব্যাপক।“(ফিকহুস সুনানি ওয়াল আসার)

এজন্য যত সামান্য ব্যয়েই কুরবানী করা হোক না কেন, সেটি হতে হবে ইখলাস ও আন্তরিকতার সাথে, আল্লাহকে খুশি করার জন্য। কারণ, আন্তরিক ও ভালোবাসার উপহার যত সামান্যই হোক না কেন, তা অনন্য-অমূল্য।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন, আমিন।

Leave a Reply