ইসলামে ব্যক্তিস্বাধীনতা : ক্ষেত্র ও পরিসর

১.

দ্য ট্রুথ অফ ফ্রিডম:

স্বাধীনতা মানবতার মর্মের প্রতিনিধিত্ব করে, কিন্তু পরম স্বাধীনতা ক্রমশ বিচ্ছুরণ এবং ধ্বংসের দিকে ঠেলে নিয়ে যায়। অপরদিকে দায়বদ্ধ স্বাধীনতা মানুষসহ অন্যদেরকে নিজেদের জীবনযাপন ও নিয়মিততাকে এক সত্তায় অন্তর্ভুক্ত করে। চাই তা পরিবার, সমাজ কিবা রাষ্ট্রের আকারেই হোক। কিন্তু সাম্প্রতিককালে অনেকক্ষেত্রে এমন প্রচুর বুলি আওড়ানো হচ্ছে যেগুলোর সারাংশ মোটামোটি এরকম যে, ‘স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণকারী কোন দায়বদ্ধতা বা সীমারেখা থাকতে পারবেনা, কেননা এটা মানবাধিকার।’ কিন্তু এই প্রস্তাবটির প্রথম পাঠটি প্রমাণ করে যে আমরা ‘এমন একটি অধিকারকে বাতিল করতে করতে যাবো যা বাস্তবিকই বাতিলের যোগ্য।’

উদাহরণস্বরূপ, কোন প্রকার সীমাবদ্ধতা ছাড়া যদি আমরা বিষয়টি বুঝতে চেষ্টা করি, তাহলে দেখি, ‘স্বাধীনতা ও অজ্ঞতার মিশ্রণ বিশৃঙ্খলার দিকে ধাবিত করে। আর ইহা এক সমীকরণ, ইতিহাস যাকে বহু জয়েন্টে সংশ্লেষণ করেছে। স্বাধীনতা মানে সমস্ত সীমাবদ্ধতা এবং নিয়ন্ত্রণগুলি থেকে মুক্তি এবং কাটিয়ে ওঠা নয়, যেমনটি অনেক মিডিয়া সাহিত্যে যে বিবৃতি প্রচার করা হয়, তাতে বলা হয়, ‘আপনি স্বাধীন যতক্ষণ না কারো ক্ষতি করছেন, এবং আপনার স্বাধীনতা অন্যের স্বাধীনতার সীমাতেই কেবল শেষ হয়ে যাবে।’

এটি কখনো সঠিক হতে পারেনা। এখানে বিখ্যাত ফরাসী জনক ভিক্টর হুগোর একটি উক্তি দিয়ে ইতি টানাকে কার্যকর মনে করছি। তিনি বলেন: ‘স্বাধীনতা মানে জীবন, কিন্তু পূণ্যহীন নিছক স্বাধীনতার কোন মানে হয়না।’ অর্থাৎ এই স্বাধীনতার কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তন্মধ্যে একটি হচ্ছে পূণ্য। সুতরাং স্বাধীনতা মানে ট্রাডিশানস থেকে দূরে যাওয়া বা উচ্চতর মূল্যবোধের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ নয়। স্বাধীনতা কেবল সামাজিক প্রেক্ষাপটের বাইরে উদ্ভট পোশাক পরা বা অন্যের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করে সাধারণ বিধিবিধানের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণ ও কর্ম সম্পাদনের নাম নয়। স্বাধীনতা একটি ভেল্যু এবং একটি ভার্চ্যুর নাম। যদি দায়বদ্ধতা এটির সাথে সংযুক্ত না হয় তবে একধরণের বিশৃঙ্খলা থেকেই যায়। অতএব দায়বদ্ধতা যদি স্বাধীনতার উপর শর্তাধীন হয় তবে স্বাধীনতার জন্য দায়বদ্ধতা নির্ধারণ আবশ্যক হয়ে যায়। যা দুটি পক্ষের প্রতিনিধিত্ব করে; মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। কারণ নিরঙ্কুশ স্বাধীনতা মানুষকে বিশৃঙ্খলা ও আকাঙ্ক্ষার চক্রে চুকে দেয়, অন্যদিকে দায়বদ্ধ স্বাধীনতা তার মান, চিন্তাভাবনা এবং অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মতো গুণাবলীকে উত্থাপন করে। ফলত দেখা যায় ইউসুফ আ. ফিজিক্যালি যদিও একজন ‘শ্ল্যাভ’ ছিলেন কিন্তু আত্মার দিক দিয়ে তিনি অনেক অনেক উর্ধ্বে ছিলেন।তাই তিনি মিশরের বাদশাহর স্ত্রী প্রদত্ত প্রলোভনে সায় দেননি বরং দ্ব্যর্থ অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন: ‘আয় রাব্ব, এরা আমাকে যে কু-কর্মের প্রতি প্ররোচিত করছে তার থেকে কারাগারই আমি অধিক ভালবাসি।’

সুতরাং, কীভাবে স্বাধীনতা কেবল স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে কোন অপরিচিত ব্যক্তির কাছে দড়িটি ন্যস্ত করা হয়? কীভাবে বিশৃঙ্খলা, অপমান, কারণ, দুর্নীতি এবং অন্যকে দোষারোপ করা স্বাধীনতা হতে পারে? সংক্ষেপে এটি একটি ভেলকি এবং মিথ্যা কথা, যা বিপুল দাবী নিয়ে মার্কেটেড হচ্ছে। এবং আমাদের ইসলামিক সোসাইটিজ যে সামাজিক মূল্যবোধ ও স্থীরতার ওপর দাঁড়িয়ে আছে তাকে আঘাত করার টার্গেট নিয়েই। চিন্তার স্বাধীনতা বা ফ্রিডম অফ থটকে অবশ্যই ধর্মের ইউনিটির ছত্রছায়ায় থাকতে হবে। বাস্তবিকই যা স্বাধীনতা বা ফ্রিডমের সোর্স। এছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকতে পারবেনা। আর তুমি ফ্রিডম! হাউ ম্যানি ক্রাইমস আর কমিটেড ইন ইউর ন্যাম? স্বাধীনতা! তোমার নামে আর কত অপরাধ সংঘঠিত হবে? আর কত?

২.

ইসলামে স্বাধীনতার ধারণা:

আল্লাহ সুবহানাহু মানুষকে স্বাধীন করে তৈরী করেছেন, স্বাধীনতা দিয়ে আদম সন্তানদের বানিয়েছেন। কোনো দাসের দাস হিশেবে সৃষ্টি করেন নি। আর এটাই তাদের উৎপত্তি। আল্লাহ মানুষকে ইচ্ছা এবং কল্পনাশক্তি ও চয়েজের ক্ষমতা দিয়েছেন। তাদের কোন কাজে বাধ্যবাধকতা দেননি। আর সে তার ইচ্ছা ও পছন্দে কেবল স্বাধীন। ইচ্ছা ও পছন্দের এই স্বাধীনতার উপর ভিত্তি করে আল্লাহ তাকে জবাবদিহি করবেন।  বান্দা যদি বাধ্য থাকে, বা তাকে বাধ্য করা হয়, তবে তার আর পছন্দের স্বাধীনতা বাকি থাকে না। এজন্যে আল্লাহ তাকে পাকড়াও করবেন না। 

‘আল্লাহ আমার উম্মতের থেকে ভুল এবং ফরগেটফুলনেসের দায় ওঠিয়ে নিয়েছেন।  এবং কিছুতে যদি তাদের বাধ্য করা হয় তার দায় থেকেও।’১’

তাই যদি বান্দা কাজে ও পছন্দে স্বাধীনতা খুইয়ে ফেলে তবে সে একরকম বাধ্য ও জবরদস্ত হয়ে যায়। এর জন্য আল্লাহ তাকে ধরবেন না। এ অবস্থায় বাধ্যবাধকতা তার জন্য ওজুহাত হিশেবে পরিগণিত হবে। তার পাপ হবে না। আর যদি সে নিজ ইচ্ছা, পছন্দ ও স্বাধীনতা অনুসারে কোন কাজ করে,তবে তার সম্পর্কে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। শরীআহ স্বাধীন মানুষের ক্রয়বিক্রয়কে নিষিদ্ধ করেছে। সবচে বড় গোনাহ হল কোন স্বাধীন ব্যক্তিকে বিক্রি করে তার লব্ধ অর্থ ভক্ষণ করা।

শরীআহ দাসত্বের নির্দিষ্ট কিছু পথ এবং বিশেষ কিছু কারণ তৈরী করে দিয়েছে।

যে কেউ এসব সীমালঙ্ঘন করে যদি কোন স্বাধীন ব্যক্তিকে বিক্রি করে দেয়, তবে সে নিজের পেটে জাহান্নামের ইন্ধন পুড়ল। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, কিছু দাম্ভিক স্বভাবের লোক কিছু মানুষকে নিজেদের দাস বানিয়েছিল, নিজেদের পূজায় লিপ্ত করেছিল।যেমনটি ফেরআউন বানী ইসরাইলের সাথে করেছিল। আল্লাহ বানী ইসরাইলের উপর অনুগ্রহ করেছিলেন।তাই,তারা দাসত্বের পর স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদন করতে পেরেছিল।তারা ফেরআউন ও তার পরিবারের দাসত্ব ও পূজার মজা চেখে দেখেছিল। আল্লাহ বলেন- ‘আর ঐ সময়ের,কথা,স্মরণ কর, যখন আমি তোমাদেরকে ফেরআউন ও তার গোত্র থেকে মুক্ত করেছিলাম, এমন অবস্থায় যে তারা তোমাদের ওপর,বর্বর শাস্তি চাপিয়ে দিয়েছিল,  তারা তোমাদের সন্তানদের জীবিত হত্যা করত, মহিলাদের জীবিত দাস বানাত।’২’

‘একই দাসত্বের শিকলে আজও মিলিয়ন মিলিয়ন মুসলমান আবদ্ধ হয়ে আছে, এবং যে স্বৈরাচারী শাসনের যাতাকলে তারা প্রতিনিয়ত পিষ্ট হচ্ছে, তা থেকে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ হচ্ছে, পারস্পরিক পরামর্শ ও ব্যক্তি স্বাধীনতা, যার মূল উৎস হচ্ছে ইসলামী চেতনাবোধ ও ঈমানী সহমর্মিতা। আর শরীআহ প্রদত্ত সেই স্বাধীনতার চেতনাই কেবল পারে আমাদের সেই দাসত্ব থেকে মুক্ত করতে, যা পশ্চিমা আধুনিক জীবন-ব্যবস্থার নামে আমাদের দাসত্বের শিকলে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে। আর শরীআহ প্রদত্ত সেই স্বাধীন চেতনা মানুষকে দুটো মূল বিষয় নির্দেশ করেছে:

১- মুসলমান কাউকে দাস বানিয়ে রাখবে না কিংবা নিজেরাও কারো দাসত্ব মেনে নিবেনা। অর্থাৎ, যে আল্লাহর দাস হিশেবে নিজেকে উৎসর্গ করেছে, সে কখনই অন্য কারো দাস হতে পারে না।

২- আল্লাহ ব্যতিত কাউকে প্রভু বলে সাভ্যস্থ করবে না। আর যারা আল্লাহকে প্রকৃত অর্থে চিনতে পারে না, তারাই বিভ্রান্তি বশতঃ সকল কিছুর মাঝে এক প্রকার প্রভুত্ব অনুভব করে থাকে। আর তারা সকলেই নিজ নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী নিজের মধ্যেও এক ধরণের প্রভুত্ব দেখতে পায়।’

সেক্যুলারদের অনেকে বলেন, সুন্নাতে নববীর পরিপূর্ণ অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করতে গেলে ব্যক্তি স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়বে এবং আধুনিক জীবন-যাত্রায় বহু প্রয়োজনীয় দিক বাধাগ্রস্ত হবে। এক্ষেত্রে আমরা তাই তুলে ধরব যা বদীউজ্জামান সাঈদ নুরসী বলেছেন-

‘প্রথমত: মুমিন সত্ত্বাগতভাবেই স্বাধীন। আর যে মানুষ সৃষ্টি জগতে-র মহান প্রতিপালকের দাসত্বে নিজেকে পরিপূর্ণরূপে সমর্পণ করেছে, সে কখনই মানুষের দাসত্ব করতে পারে না। আর এই দৃষ্টিকোণ থেকে যার,ঈমান যত বেশী সুদৃঢ় হবে তার স্বাধীনতাও তত বেশী শক্তিশালী ও সুরক্ষিত হবে।

দ্বিতীয়ত: প্রচলিত অর্থে ব্যক্তি স্বাধীনতা বলতে যা বোঝায় তা মূলত: অবাধ হিংস্রতা বরং তা অন্য অর্থে অবাধ পাশবিকতারই নামান্তর। তাই মানবাধিকার বা মানবিক মূল্যবোধ অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে ‘স্বাধীনতার রূপরেখা ও সীমা সুনির্দিষ্ট করে দেয়া অতীব জরুরী একটি বিষয়।

তৃতীয়ত: এক শ্রেণীর নির্বোধ ও স্বেচ্চাচারী ব্যতিত ব্যক্তি স্বাধীনতার নামে মূলতঃ কু-প্রবৃত্তির দাসত্বে আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে এমনভাবে অন্যায়-অবিচারে নিজেদের জড়িয়ে ফেলেছে যে, প্রকৃত ব্যক্তি স্বাধীনতা কিংবা স্বাধিন জীবন-যাপন বলতে তাদের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’*’

৩.

দ্বীনের শত্রুদের নিকট স্বাধীনতার ধারণা:

ইসলামের শত্রুরা স্বাধীনতার নাম আওড়িয়ে অনেক লোককে ফুঁপিয়ে ফাঁপিয়ে তুলছে। স্বাধীনতার নামে উদ্বুদ্ধ করেছে, করছে। এভাবে তাদেরকে নিজেদের প্রবৃত্তি, আবেগ এবং পশ্চিম ও প্রাচ্যের নীতিমালার দাস বানিয়ে রেখেছে। তারা এমনসব মিথ্যা থিসিস দিনরাত মানুষকে খাইয়ে দিচ্ছে। মানুষও ভুবন ভুলার ন্যায় সেসব গোগ্রাসে গিলছে। উপরন্তু আল্লাহ সুবহানাহু স্বয়ং মানুষকে যখন আচরণে স্বাধীনতা দিয়েছেন। যেমন: ক্রয়-বিক্রয়ে, ভাড়া নিয়োগে এবং বন্দক ও হাওয়ালায়। এছাড়াও তিনি বিবাহ, খাদ্য এবং পোশাকে স্বাধীনতা দিয়েছেন। তখন এসবের মাঝে তিনি নির্দিষ্ট কিছু সীমাবদ্ধতা দাঁড় করেছেন। কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। আর পরম স্বাধীনতার নীতির অকার্যতা জানার জন্য আল্লাহ প্রদত্ত সীমাবদ্ধতা বা বিধিনিষেধ সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেয়া গুরুত্বপূর্ণ।

প্রথমত: ‘কোন বিশ্বাসী পুরুষ বা মহিলার জন্য আল্লাহ ও তার রাসুল যখন কোন বিষয়ে সুনিশ্চিত ফায়সালা করেন তখন সেক্ষেত্রে নিজেদের ব্যক্তি চয়নের অবকাশ নেই।’৩’

তাই যখন মানুষ কোন কিছুর ইচ্ছে করে, ঝুঁকে পড়ে, কিন্তু আল্লাহ ও তার রাসুলের ডিসিশন তার ইচ্ছা বা আগ্রহের বিপরীতে হয়, আল্লাহ ও তার রাসুলের ডিসিশনের অনুগত হওয়া তখন তার জন্য আবশ্যক।

‘যখন বিশ্বাসীদেরকে আল্লাহ ও তার রাসুলের দিকে আহ্বান করা হয়, তাদের মাঝে ফায়সালা করার জন্য, তখন তাদের কথা হয় এমন যে, ‘আমরা শুনলাম এবং মানলাম।’৪’

এজন্য ইসলামের মৌলিক নীতিমালার অন্যতম হচ্ছে – অবাধ্যতা বা পাপমূলক কাজে কোন স্বাধীনতা নেই। ইচ্ছে মতো কিছু করার সুযোগ এক্ষেত্রে ইসলাম দেয়নি। আর স্বাধীনতা ও হারামের মাঝে বিভার্জন করা আবশ্যক। রাসুল সা. বলেন: “আমি যখন তোমাদের কোন বিষয়ে বাধা দেই, তখন অবশ্যই তোমরা তা বর্জন করো।”৫’

ব্যস, আমরাও বিরত হলাম। তাই একথা বলা সম্ভব নয় যে, “আল্লাহকে গালি দেয়া এবং নবী ও রাসুলদের অবমাননা করার বা ধর্মের মৌলিক বিষয়াদির বিধিবিধান ও আইন লঙ্ঘন করার স্বাধীনতা আছে। আর উত্তরাধিকারের বিধিবিধান, ইসলামে অভিভাবকত্বের আইন বা বিবাহের বিধান কি’বা তালাকের রীতিনীতির সমালোচনার স্বাধীনতা নেই। অনুরূপ শরীআহ যে সকল দণ্ডবিধি আরোপ করে থাকে যেমন; চুরি করলে হাতকাটা, যিনার শাস্তিস্বরূপ রজম করা ইত্যাদি বিধিবিধানের সমালোচনা করার কোন স্বাধীনতা নেই। সুতরাং কোন সিচুয়েশনেই উভয়ের সম্মতিতে যিনা হলেও যিনাকারী পুরুষ ও মহিলার শাস্তি বিলুপ্ত বা অকার্যকর হবে না। কেননা তারা এতে সন্তুষ্ট হলেও আল্লাহ সন্তুষ্ট নন।

এভাবে সুদি লেনদেনেও দাতা ও গ্রহীতার সদয় সম্মতি থাকলে। সুদ কখনো হালাল হবে না। চাই তা সহনীয় পর্যায় বা চুড়ান্ত পর্যায়ের হোক। কেননা আল্লাহ এতে সন্তুষ্ট নন। এভাবে মহিলা নিজ ঘরে থেকে বের হওয়া, পোশাক পরা, যথেচ্ছা ভূষণ প্রদর্শন করা পারফিউম ব্যবহার করা, ফ্রি মিক্সিং এবং মার্কেটের যে কোন অলিগলিতে হাঁটা, যে কারো সামনে নগ্ন হওয়া ও যাচ্ছে স্বাধীনতার নামে করতে পারবে না। এসবের কোনটিও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওজুহাতে করতে পারবে না। কেননা এতে আল্লাহ সন্তুষ্ট নন।

৪.

স্বাধীনতা সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা:

(ক) ব্যক্তি স্বাধীনতা:

কিছু লোক স্বাধীনতার নীতিগুলোতে একটি ভুল বিষয় বুঝেন, তা হচ্ছে – “স্বাধীনতার নামে তুমি কারো ক্ষতি করতে পারবে না।” বাকি সব পারবে। তারা বলে, “তোমার স্বাধীনতা কেবল তখনই স্থীর হবে যখন তুমি আমার কোন ক্ষতি করে ফেলবে।” এছাড়া তোমার ফ্রিডম বলবৎ থাকবে পুরোদমে। এজন্যে স্মোকিং (ধূমপান) কারও নিকট তখন নিষিদ্ধ হবে যখন তা শুধু অন্যের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। একারণে তারা নিষ্ক্রিয়

ধূমপানের বিষয়ে আলোচনা করে। এবং বলে যে, “যখন তুমি ঘরে একা থাকবে তখন তুমি ধূমপান করো, তখন তুমি স্বাধীন। বাট আমার সামনে ধূমপান করো না, এতে তোমার ফুঁকা ধোঁয়ায় আমার ক্ষতি করবে।”

একথার মধ্যে যে ভুলটা থেকে যায় তা হচ্ছে তাকে তার ধূমপানে সমর্থন করে কথা বলা। “যখন ঘরে একা থাকো তখন ধূমপান করো, কেননা তখন তুমি স্বাধীন “। এটি আইনানুগভাবে ভুল বাক্য। সুতরাং ধূমপান করা কারো জন্য বৈধ নয়, ঘরে হোক বা বাহিরে। একা থাকুক বা জনসম্মুখে। কেননা এটি হারাম। বরং এর দ্বারা নিজের ক্ষতিই হয় বেশি।

অধিকাংশ মানুষ ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ইস্যুতে বুঝারই চেষ্টা করে না যে, শরীআহ মানুষের ব্যক্তির জন্য ক্ষতিকর বিষয় হওয়ার কারণেই নিষেধ প্রদান করেছে। অথচ বিপরীতে তারা বলে, “কোন ব্যক্তি যদি শুধুমাত্র নিজের ক্ষতি করে তবে সে যাচ্ছে তাই করতে পারে। এ অনুসারে সে যদি আপন রুমের দরজা বন্ধ করে ড্রাগ হাতে নিয়ে তা সেবন করে। এবং ঘরেই অবস্থান করে। বাইরে গিয়ে কারো ক্ষতি করেনা। এরপর যদি তার থেকে ড্রাগের প্রতিক্রিয়া মিইয়ে আসে এবং সুস্থ মস্তিষ্কে গাড়ি চালাতে সক্ষম হয়। তবে এতে সে স্বাধীন। ড্রাগস সেবন করুক!’

এমনটিই যদি হয়ে থাকে, তবে কসম ঐ সত্তার, যিনি ব্যতিত কোন ইলাহ নেই! ইহা ইবলিসের বৃহৎ এক চক্রান্ত ও মহা মিথ্যাচার বৈ কিছু নয়। কেননা সে এমন স্বাধীন নয়। নিজ গৃহাভ্যন্তরে একা যা কিছু করছে দুজন ফেরেশতা তা পর্যবেক্ষণ করছেন এবং নোট করছেন। যার প্রতিটি ক্ষণ ও বিষয়ের হিশেব আল্লাহ পরকালে নেবেন।….

সাম্প্রতিক বিচ্যুতিগুলোর মধ্যে তুমি এমন অনেককে পাবে যে বলে, ‘তুমি আমার সামনে কুফরি করোনা। আল্লাহ ও তার রাসুলকে গালি দিয়োনা। বরংচ ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে যাকে ইচ্ছে গালি দাও, আল্লাহ, ধর্ম, সাহাবি বা নবী যাকে ইচ্ছে গালি দাও। যাচ্ছে করো।’

এটা এক গুরুতর মিথ্যাচার। কেননা কেউ শুনতে না পেলে ‘আল্লাহ, ধর্ম,সাহাবি, নবীদের গালি দেয়া’ কারো জন্য কীভাবে সমর্থিত ও অনুমোদিত হয়ে যায়? অতএব এতে মৌনতা বা সমর্থন দেয়া মোটেই জায়েজ নয়। কুফরীর প্রতি মৌনতা প্রদর্শন বা নীরব সমর্থন করা হারাম। মৌনতা বা সমর্থনের কারণে কুফরি বৈধতা পায়না। ঘরে একা থাকাবস্থায়ও যদি কেউ কোন পাপ বা কুকর্ম করে তা অপরাধ এবং গোনাহ হিশেবে সাভ্যস্থ হবে। তুমি যদি কাউকে না দেখ বা তাকে শুনতে না পাও তাহলে তার জন্য তুমি জিজ্ঞাসিত হবেনা। কিন্তু কেউ যদি তোমাকে জিজ্ঞেস করে, ‘অমুক নিজ ঘরে যে গোনাহ বা অপরাধ করছে এটা কি তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ভেতরে পড়ে? তোমাকে বলতে হবে, ‘না, নিজ ঘরেও সে যা করবে তা স্বাধীনতা হতে পারেনা।’ তুমি কারো সম্পর্কে কিছু না জানলে এজন্যে ধৃত বা জিজ্ঞাসিত হবেনা। তুমি তার হিশেব নিবেনা। তার রাব্ব তার হিশেব নেবেন। হ্যাঁ, তবে তার হুকুম কী? হারাম। সে একাবস্থায় এমন করার অধিকার রাখে? না, শরীআহ তাকে এ অনুমোদন দেয়নি, এটা হারাম। সে গোনাহগার। আল্লাহর নিকট শাস্তিপ্রাপ্ত হবে।

যাহোক, এমন কোন অপরাধ বা গোনাহ পাওয়া যাবেনা যা নিজস্ব সীমা উতরে অন্যকেও দাগ কাটবেনা। এই অপরাধ বা গোনাহের কারণে ব্যক্তির হৃদয়ে একটি ‘ব্লাক জোক’ কালো দাগ পড়ে যায়, যা সে ঘর থেকে বের হবার পর লোকদের সাথে আচরণের সময় প্রকাশ পায়। অপরাধ কেবল নিজের মধ্যেই দায়বদ্ধ থাকেনা অন্যের ওপরও এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রভাব বিস্তার করে।

(খ) পরম স্বাধীনতা:

শরীআহ যখন বলেছে, ‘লা দ্বারারা ওয়ালা দ্বিরারা ফীল ইসলাম।’৬’ এর অর্থ কি?

‘নিজের ক্ষতি করোনা এবং অন্যের ক্ষতিসাধন করোনা।’

কিছু লোক শুধু দ্বিতীয় অংশটি বুঝে, অর্থাৎ ‘অন্য কারো ক্ষতি করা তোমার জন্য বৈধ নয়।’ আর অন্য অংশ তথা, ‘নিজের ক্ষতি করোনা।’ তোমার নিজের ক্ষতি করাও তোমার জন্য জায়েজ নয়, যদিও নিজে একা হও। এ অর্থটি তারা খুব চতুরতার সাথে এড়িয়ে যায়। সুতরাং ইসলামে স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ।  আর মহা মিথ্যাচার হল এ কথা বলা যে, ‘পরম স্বাধীনতা,  আমরা নিরঙ্কুশ স্বাধীনতা চাই।’ একারণে আমরা বলবো, ইসলামে পরম স্বাধীনতা বলে কিছু নেই, আর যদি পরম বলে কিছু থাকে তবে আল্লাহর দাসত্বের কোনো মানে হয়না। পরম স্বাধীনতার দাবী হল তাকে কোন সীমার সাথে আবদ্ধ করা বা কোন বিধিনিষেধের শৃঙ্খলে আটকানো যাবেনা। এমন যদি হয় তবে আল্লাহ মানুষকে কীভাবে পরিক্ষা করছেন?  যারা স্বাধীনতাকে সীমার ভিতরে মানতে চায়না তারা কি রাবের একনিষ্ঠ বান্দা না অন্যকিছু?  অবাধ্যতা বা আনুগত্যের বিষয়টি সীমাবদ্ধতা ছাড়া কীভাবে প্রদর্শিত হবে? স্বাধীনতার উপর বিধিনিষেধের মূলনীতিটি নির্ধারণ করে যে কোনটি অবাধ্যতা বা আনুগত্য,  আর কোনটি সৎকর্ম বা কুকর্ম!

যখন তোমাকে বলা হয়, ব্যভিচার করোনা, সুদি কারবার করোনা,  মদ পান করোনা,  শূকর খেয়োনা, একা থাকাবস্থায়ও!   এসব বিধিনিষেধ হল সীমাবদ্ধতা, দায়বদ্ধতা বা স্বাধীনতার ওপর দাঁড় করানো আল্লাহ প্রদত্ত সীমারেখ, প্রাচীর।এখন যদি কেউ বলে ‘আমি আমার ঘরে একা একা শূকর খাবো, কারো ক্ষতি করবোনা। ‘ এটা বৈধ নয়। একা হলোও। আল্লাহর প্রতি মানুষের দাসত্ব এখানে তার সীমারেখা থেকে বিরত থাকার মাধ্যমেই প্রদর্শিত হবে। এগুলো কেবল সীমা নয় যা অন্যের ক্ষতির কারণ হয়। সীমারেখা বা বিধিনিষেধ এমন কিছু বিষয় যা,নিজের ক্ষতির কারণও হয়। এখন কেউ গৃহে মদ খেলেও সে আল্লাহর সীমারেখার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করল। সম্মতিতে দুজনে ব্যভিচার করলে ও তারা আল্লাহর দাসত্বের শৃঙ্খলের প্রতি বিদ্রোহ করল। একাও যদি ঘরে আল্লাহ বা নবীকে গালি দেয় তবে সে আল্লাহর দায়বদ্ধতার নীতি অবজ্ঞা করে ডিঙ্গিয়ে গেল।

অতএব, আল্লাহর এসব সীমা লঙ্গণের হিসাব বান্দাকে অবশ্যই বুঝে দিতে হবে। আর পশ্চিমা স্বাধীনতা কখনো এসব বলবেনা। পশ্চিমা স্বাধীনতা কেবল অন্যের ক্ষতিসাধনের মাঝে সীমাবদ্ধ।  তাদের দাবি অনুসারে তুমি যদি কারো ক্ষতি না করোতবে তোমার স্বাধীনতা খোল্লমখোলা, পরম, নিরঙ্কুশ। তারা স্বাধীনতাকে শুধু অন্যের ক্ষতিসাধনের সাথে সংজ্ঞায়িত করে।

(গ) বিশ্বাসের স্বাধীনতা:

এরকম তারা আরেকটি কথা বলে, ‘বিশ্বাসের স্বাধীনতা।’ তুমি যা ইচ্ছা তা বিশ্বাস করতে পারো। তুমি চাইলে পাথর, গাছ, বিদ্যুতের স্তম্ভের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করতে পারো। শুধু দ্বীন বা ধর্ম ছাড়া যা ইচ্ছা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করতে পারো। তুমি হিন্দু, বৌদ্ধ,  খ্রিষ্টান,  ইহুদী বা শিখও হতে পারো। এটা নিছক তোমার বিশ্বাসের স্বাধীনতা কিন্তু ইসলামে এটার অস্তিত্ব নেই। ইসলাম একমাত্র আল্লাহর দাসত্ব ও তাী কাছে পূর্ণ আত্মসমর্পণকরতে বাধ্য করে।

‘আর যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্যকিছুকে ধর্ম হিশেবে কামনা করবে তার থেকে তা গ্রহণযোগ্য নয়।  সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’৭’

আল্লাহ অনেক জাতিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়েছেন, তারা তার সাথে কুফরি এবং অংশীদার সাভ্যস্থ করার কারণে। তিনি আ’দ, ছামূদ, কাওমে লূত ও শোআইবকে শাস্তি দিয়েছেন।

(ঘ) ফ্রিডম অফ থট:

বেশ কিছু লোক আছে, তারা মতামত বা চিন্তার স্বাধীনতার কথা বলে এবং এতে তারা কুফরি স্বাধীনতার প্রবেশ ঘটায়। চিন্তার স্বাধীনতাকে অবিশ্বাসী স্বাধীনতা তথা কুফরি স্বাধীনতার সাথে সংমিশ্রণ করে নেয়। চিন্তার স্বাধীনতার আড়ালে তারা কুফরি স্বাধীনতাকে প্রমোট করে। পথভ্রষ্ট যেকোনো পথ ও মতের সাথে বিশ্বাস স্থাপন তখন সম্ভব হয়। একারণেই ‘রিদ্ধাহ’র হদ’ তাদের কাছে একটি সঙ্গত প্রবলেমই মনে হয়। অথচ হাদীসে এসেছে, ‘যে তার স্বধর্ম ত্যাগ করে, তোমরা তাকে হত্যা করে ফেলো।’৮’

এখানে স্বধর্ম দ্বারা ইসলাম ধর্ম উদ্দেশ্য।  উলামাগণ হাদীসটির এমনই ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন।  তারা বলেন- ‘যে কেউ ধর্ম থেকে বের হতে চায় সে তা পারবে, কিন্তু ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করলে তাকে হত্যা করা হবে। এটা না করলে ধর্ম তখন ‘গেট উইদাউট এ গেট’ এর মতো হয়ে যায়। যাতে না কোনো গার্ড আছে না শেফার্ড।

মানুষ ঝটলা বেঁধে ধর্মত্যাগে সাহস করবে।ইসলাম ছাড়তে উদ্যত হবে। তখন দ্বীন বা  ধর্ম একটি ‘প্লে-থিংয়ে’ পরিণত হবে। যার ইচ্ছে ধর্মে ঢুকবে যখন ইচ্ছে বেরিয়ে যাবে।

এখন যদি কেউ বলে- ”ধর্মের ব্যাপারে কোন চাপপ্রয়োগ বা বাধ্যবাধকতা নেই।’৯’ এটার মানে কী?

এটার সদুত্তর অন্যান্য আয়াত ও হাদীসে সুস্পষ্ট দেয়া আছে, ‘যে কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কিছু ধর্ম হিশেবে পেতে চাইবে, কক্ষনো তা তার থেকে গৃহীত হবেনা।’১০’

‘আমাকে আদেশ করা হয়েছে আমি যেন মানুষকে হত্যা করে ফেলি যতক্ষণ না তারা একথার সাক্ষ্যদান করে যে ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাসক নেই।’১১’

অতএব প্রত্যেক অমুসলিম,  খ্রিষ্টান যারা ইসলাম গ্রহণ করতে চায়না এবং নিজ ধর্মে বহাল থাকতে চায় তারা অবশ্যই ট্রিবিউট (যিজয়া)  পে’ করে থাকবে। কিন্তু তাদের জানিয়ে দেয়া হবে যে, ‘তুমি যদি এ অবস্থায় মারা যাও তবে নিঃসন্দেহে জাহান্নামি হবে, তথায় চিরকাল থাকবে।’

‘ঐ। সত্তার কসম যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ!  এই উম্মতের কোনো ইহুদি বা খ্রিষ্টান যদি আমার কথায় কান না দেয়, এরপর আমি যে  রিসালাত নিয়ে এসেছি তাতে ইমান না এনে মৃত্যুবরণ করে তবে সে অবশ্যই জাহান্নামি।’১২’ ‘১৩’

শেষকথা:

‘মুসলিম উম্মাহর জাগতিক ও বৈষয়িক উন্নতির জন্য যে শক্তিগুলোর খুব প্রয়োজন তন্মধ্যে একটি হচ্ছে ইসলামে স্বীকৃত ‘ব্যক্তি স্বাধীনতা’, যা মানুষকে প্রতিনিয়ত সকল ধরণের ইতিবাচক কল্যাণ, বৈষয়িক উন্নতি ও মানব সভ্যতার জন্য উপকারি যে কোন আবিষ্কারের প্রতিযোগিতায়,বিজ্ঞানীদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাব নিয় গ্রহণ করে থাকে। মানব কল্যাণে মুসলিম বিজ্ঞানীদের অসাধারণ অবদানের হাত ধরেই যে আজকের পশ্চিমা বিশ্ব অন্ধকার থেকে আলোয় বেরিয়ে এসেছে। ইতিহাসে সেই চরম সত্য ধামাচাপা দিয়ে রাখা যায়নি। আর ইসলাম ব্যক্তি স্বাধীনতায় পুরোপুরি বিশ্বাস করে বলেই ইসলামে ছোট-বড় যাবতীয় স্বৈরাচার, যুলুম ও জোর-জবরদস্তি কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই সাথে মানুষের স্বাধিন সত্ত্বা ও চিন্তা-ভাবনাকে সম্মান করা হয়েছে। আর বিজ্ঞান সাধনার ক্ষেত্রে ইসলামের ুএই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিই মুসলিম উম্মাহকে নব নব আবিষ্কার দ্বারা,মানব সভ্যতাকে সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণীত করেছে। তাই বিজ্ঞানের এই চরম উৎকর্ষতার যুগে বিজ্ঞান গবেষণায় ইসলামের সেই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকে কাজে লাগিয়ে আগামীতে মুসলমানরাই মানব সভ্যতার সার্বিক উন্নতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে আমি মনে করি।’

সূত্রধার:

(১)(আল জামিউস সাগীর, ১৭৩১১) ও (ইবনু মাজাহ,২০৪৩)

(২) (আল বাক্বারা,৪৯)

(৩) (আহযাব,৩৬)

(৪) (সূরা নূর,৫১)

(৫) (বুখারী, ৭২৮৮)

(৬) (ইবনু মাজাহ, ২৩৪৪) (সাহীহ আল জামিউস সাগীর, ৫১১৭)

(৭) (সূরা আল ইমরান, ৮৫)

(৮) (বুখারী,৩০১৭)

(৯) (বাকারা,২৫৬)

(১০ (আল ইমরান, ৪৮৫)

(১১) (বুখারী,৩৯৩)

(১২) (মুসলিম,১৫৩)

(১৩) almunajjid.com, শাইখ সালেহ আল মুনাজ্জিদ।

(*) উম্মতের মরণে জীবনের আর্তনাদ, বদীউজ্জামান সাঈদ নুরসী।

Leave a Reply